ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান

ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান লাগার ঘটনার সাথে কম বেশি সকলেরই অভিজ্ঞতা আছে। সেই টান লাগার অল্প সময়টুকুই যে কি অসহ্যকর ব্যথা ও যন্ত্রণা তা সহ্য সীমার বাইরে চলে যায়। তবে এ ব্যথা নিজে থেকেই সেরে যায়। 

digital-dream
কিন্তু প্রশ্ন হল রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ে টান লাগে কেন এবং এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন উপায় আছে কি? মেডিকেল ভাষায় পায়ে টান লাগাকে লেগ ক্রাম্প বলে। আজকের আর্টিকেলে রাতে পায়ে টান লাগার কারণ, প্রতিকার ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব । এ সম্পর্কে জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচীপত্রঃ পায়ের মাংশ পেশীতে টান ধরার কারণ কি?

 ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান

পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরার কারণ কি তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। আমরা আপনাকে খুব সহজেই কিছু খাদ্যাভ্যাস ও বাসায় কিছু ব্যায়াম এর মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করতে সহযোগিতা করব। যদি আপনার লেগ ক্রাম্প বা মাসলে টান এ ঘটনার সাথে কোন ভাবে সম্পৃক্ততা থেকে থাকে তবে লক্ষ্য করবেন আপনার স্টেসের সাথে এটি কতটা ওতপ্রতভাবে জড়িত। যখন আপনি খুব বেশি পরিশ্রম করেন ,হাঁটেন কিংবা ব্যায়াম করেন তখন পায়ে প্রচুর চাপ পড়লে পায়ে টান লাগার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।

লেগ ক্রাম্প বা পায়ে টান লাগা কি ?

লেগ ক্রাম্প বা পায়ে টান লাগা মুলত পায়ের কোন একটি পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া।  অর্থাৎ পায়ের কোন একটি পেশী যখন শক্ত হয়ে যায় তখন একে লেগ ক্রাম্প বলে। যাকে আমরা পায়ে টান লাগা বলি। এটি সাধারণত রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করে হয়ে থাকে এছাড়াও দিনের যেকোনো সময় ও হতে পারে। সেখানে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং সেই পাকে নড়াচড়া করা ,হাঁটা বা দাঁড়ানো ইত্যাদি অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। অর্থাৎ পায়ের কার্যকারিতা তখন শূন্য। রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ের রগে টান লাগার প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ ধূমপান ছাড়ার ১৫ কৌশল

লেগ ক্রাম্পের স্থায়িত্বকাল ও কখন কি কারণে হয়

লেগ ক্রাম্পের স্থায়িত্বকাল ও কখন কি কারণে হয় এটি জানা থাকলে আপনার প্রতিকার ও সাবধান হওয়া খুব সহজ তর হয়ে যাবে। লেগ ক্রাম্প সাধারণত ১০ সেকেন্ড থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যে কোন সময় লেগ ক্রাম্প হওয়ার সম্ভাবন রয়েছে। লেগ ক্রাম্প সাধারণত বিশ্রামের সময় বা রাতে ঘুমানোর সময় বেশিরভাগ লোকের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়। 

এছাড়াও রাতে বা সকালে বিছানা থেকে উঠতে গিয়েও লেগ ক্রাম্প হয়ে থাকে এবং পেশিতে প্রচন্ড টান অনুভব করেন এবং অসহ্যকর কষ্ট পেতে থাকেন। ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান লাগার সহজ ও সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতেই আজকের এই আর্টিকেল।

যে সকল মাসলে লেগ ক্রাম্প  হয়

যে সকল মাসলে লেগ ক্রাম্প  হয় এ বিষয়ে আপনি আগে থেকেই জেনে থাকলে সে সকল মাসলের  নিয়মিত ব্যায়াম করলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সবচেয়ে সহজ। সাধারণত পায়ের পিছনে কাফ মাসুল, এছাড়াও পায়ের পাতা ,উরুর সামনের ও পিছনের মাসুলেও টান লাগতে পারে। যদিও পায়েরের টান অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী তবুও কখনো কখনো টান হওয়ার ব্যথা ২৪ ঘন্টার মত থাকতে পারে। রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ের রগে টান লাগার ব্যথা যে কি অসহ্য তা একমাত্র ভুক্তভোগী ব্যক্তিই বুঝে থাকেন ।

লেগ ক্রাম্প হওয়ার কারণ সমূহ 

লেগ ক্রাম্প হওয়ার কারণ ঠিক কোন কারণে তা একেবারেই অজানা। অভিজ্ঞদের কারো কারো মতে এ সমস্যার নির্দিষ্ট কোন কারণ এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, শারীরিক সমস্যার সঙ্গে কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশিত হয়। তন্মধ্যে বয়স বৃদ্ধির সাথে ,গর্ভবতী মহিলাদের এ সমস্যা খুব বেশি হয়ে থাকে, এছাড়াও কিছু কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা শারীরিক সমস্যার কারণেও হয়ে থাকতে পারে বলে অভিজ্ঞদের মতামত। আসুন ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান লাগাসহ মাসল ক্রাম্পের আরো অন্যান্য কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
  • পায়ের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ
পায়ের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগের কারণেই মূলত মাসল ক্রাম্পের ঘটনা ঘটে থাকে বলে প্রতিয়মান। পায়ের মসলের অতিরিক্ত ব্যবহার ,বেশি বেশি ব্যায়াম, অতিরিক্ত পরিশ্রম পায়ের মাশুলে চাপ পড়ার প্রধান কারণ।

আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধের ৫ উপায় 

  •  স্নায়ুর সমস্যা 
 সকল অভিজ্ঞদের মতে এটি স্নায়ুর সমস্যা বলে প্রতীয়মান। এ সমস্যা তখনই বাড়ে যখন স্নায়ু ও মাসলের সমন্বয়ে বিঘ্ন ঘটায়। এ স্নায়ু জনিত সমস্যার কারণেই ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান লাগার সম্ভাবনা বা আশঙ্কা অনেক বেশি। তাই রাতে ঘুমের মধ্যে লেগ ক্রাম্পের ঘটনা ঘটে থাকে।
  • রক্ত সঞ্চালন কম থাকা
রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ে টান লাগে কেন তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো পেশী গুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত পরিবাহিত না হওয়া। আর যখন পেশীগুলোতে পর্যাপ্ত রক্ত পরিবহনে বিঘ্ন ঘটে তখন মাসলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় ফলে এ সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
  • শীত বা প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে
পায়ে টান ধরার জন্য শীত বা তীব্র ঠান্ডা আরো একটি প্রধান কারণ। তীব্র শীতে সাধারণত আমাদের হাত ও পায়ের মাংস পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায় ফলে মাসলে অক্সিজেনের অভাব হয়ে এ ঘটনা ঘটে থাকে।
  • পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন
পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন পেশিতে টান ধরার অন্যতম প্রধান কারণ। শরীরে পানির পরিমাণ সঠিকভাবে না থাকলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে এ ক্ষেত্রে পানি কমও হতে পারে আবার বেশিও হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায়
মায়েদের প্রেগনেন্সি বা গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে খনিজের অভাবে ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান ধরে যা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার বা ঘটনা। তবুও এ কথা অনুস্বীকার্য যে স্বাভাবিক মানুষের পায়ে টান ধরার যে কষ্ট তার চেয়ে প্রেগন্যান্সি অবস্থায় মায়েদের এই কষ্ট যেন আরো অধিক মাত্রায় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। 
  • বয়স ও জেন্ডার 
 যাদের বয়স খুব বেশি হয়ে গিয়েছে সাধারণত তারাই রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ের রগে টান লাগার পড়া সমস্যায় বেশি ভোগেন। এছাড়া ও পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে পায়ে টান ধরার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।
  • পজিশনিং
অনেক সময় একই পজিশনে বসে দাঁড়িয়ে বা শুয়ে থাকলেও লেগ ক্রাম্প হতে পারে। বেশিরভাগ সময় রাতে ভুল দেহভঙ্গিতে ঘুমালে এমনটি হয়ে থাকে।
  • অলস জীবনযাপন
রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ে টান লাগে কেন তার অন্যতম প্রধান কারণ অলস জীবন যাপন করা। যারা বেশিক্ষণ শুয়ে বসে থাকেন তাদের পায়ে টান লাগার সম্ভবনা খুব বেশি। একে ইনঅ্যাক্টিভিটি বা সেকেন্ডারি লাইফ লিড বা নিষ্ক্রিয় জীবন যাপন বলে। এ সকল অলস জীবন যাপনকারী ব্যক্তিদের পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরার কারণ অন্যতম।
  • ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্যহীনতা
ইলেকট্রোলাইটস এর মূল উপাদান গুলো হলো সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ম্যাগনেসিয়াম ,ক্যালসিয়াম ,ফসফেট এবং বাই কার্বনেট। ইলেকট্রোলাইটসের এই উপাদান গুলো আমাদের কোষ বা স্নায়ুকে কার্যকারী রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যখন সোডিয়াম ,পটাশিয়াম ,ক্লোরাইড এবং ম্যাগনেসিয়াম এগুলোর ঘাটতি হয় তখন পায়ে টান লাগার সম্ভাবনা বেশি। উপরে আমরা পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরার কারণ নিয়ে অনেকগুলো বিষয় আলোচনা করেছি। উপরোক্ত আলোচনার যে বিষয়গুলোর সাথে আপনার পায়ে টান ধরার কারণটি মিলে যায় তা আইডেন্টিফাই করে সে বিষয়ে সচেতন হোন।

কিছু কিছু রোগের কারণে পায়ে টান লাগতে পারে  

কিছু কিছু রোগের কারণে পায়ে টান লাগতে পারে। রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ে টান লাগে কেন তার মধ্যে বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রোগ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
  • ডায়াবেটিস মেলাইটাস অ্যান্ড হাইপো-থাইরোডিজম

 রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি হলে সঠিকভাবে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় ফলে রক্তে ও মাসুলে অক্সিজেন মাত্রা কমে যায় এতে স্নায়ুর ক্ষতি হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে ডায়াবেটিক ড্যামেজ বলে। এ কারণে ও পায়ে টান লাগতে পারে বা লেগ ক্রাম্প হতে পারে।
  •   পারকিনসনস ডিজিজ 

 স্নায়ু ও পেশির ব্যাধি যেমন নিউরোপ্যাথি ,ওরোপ্যাথি এবং পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি যা পায়ের ক্ষতি করে। যাদের পারকিনসন ডিজিজ আছে তারা প্রায় প্রতিদিনই ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান পড়া এ সমস্যার মধ্যে পড়ে থাকেন। 
  •   কিডনির সমস্যা 

 যারা কিডনি রোগী তাদের পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরার কারণ অন্যতম। অনেকদিন যাবত যারা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদেরকে সি.কে.ডি বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বলে। এক্ষেত্রে সাধারনত রোগীর প্রসবের পরিমাণ ও বেগ দুটোই কমে যায় ফলে সুস্থ থাকার জন্য কিডনিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেককে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন করতে হয় ফলে ওইসব ওষুধ (যেমন ডাই ইউরেটিক) বা কিডনি জনিত সমস্যার কারণেও হইতে পারে । 
  •  ক্যান্সারের চিকিৎসায় 

 ক্যান্সারের চিকিৎসার পর স্নায়ুর ক্ষতি হলে মাসুলের কাপ মাশুল ক্রাম্প হতে পারে। তাছাড়া কোমরে ব্যাথার কারণে পিঠের ব্যাথায় নার্ভ কম্প্রেরেশনের কারণে আপনার পিঠ ও নার্ভ এ যায় তাতে পায়ে কম্প্রেশন হয় ফলে পায়ে টান বা ক্রাম্প  লাগতে পারে।
  •  উচ্চ রক্তচাপ

 যারা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার টেনশনে ভোগেন তারা প্রায় এর সমস্যা বা পায়ের টান ধরার সমস্যার মধ্যে পড়েন। কারণ উচ্চ রক্তচাপে এমন কিছু ওষুধ আছে যাতে ইউরনের পরিমাণকে বাড়িয়ে দেয় । এজন্যও রাতে পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরার কারণ হতে পারে।

লেগ ক্রাম্প বা পায়ে টান  লাগলে করণীয় 

লেগ ক্রাম্প বা পায়ে টান লাগলে করনীয় কি তা জানা এখনকার আলোচনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা আপনাদের সুবিধার্থে পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো 

  • যখন পায়ের মাশলের টান ধরে তখন মাশল শক্ত হয়ে যায় এ থেকে মুক্তি পেতে আক্রান্ত স্থান ও এর চারপাশে আলতো বা হালকাভাবে চার আঙ্গুলের চাপে মেসেজ করুন দেখবেন ধীরে ধীরে মাংসপেশী স্বাভাবিক হয়ে এসেছে এবং ব্যথাও কমে গেছে। 
  • হট ওয়াটার ব্যাগ এবং বরফের সাহায্যে হট ও কোল্ড সেঁক দিতে পারেন। প্রতি ১০ সেকেন্ড পরপর হট সেক ও কোল্ড সেক পরিবর্তন করে দিতে হবে। এতে ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যাবে। 
  • সারা দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করুন প্রয়োজনে ডাবের পানি, শরবত ,খাবার স্যালাইনও খেতে পারেন।
  • পায়ে টান ধরলে ভারী যে কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন এতে টান ধরা জায়গায় চাপ বাড়বে না বরং ধীরে ধীরে চাপ কমতে থাকবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। পরবর্তীতে টান  বা লেগ ক্রাম্প এমনি এমনি  চলে যাবে ।

পায়ে যেন  টান না লাগে তার ঘরোয়া উপায়

পায়ে যেন টান না লাগে তার ঘরোয়া উপায় জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা আমরা বিনা খরচে এবং খুব সহজেই নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত  সহজেই পায়ে টান লাগা থেকে উপকার পেতে পারি। 

  • কাত হয়ে ঘুমানোর সময় দুই পায়ের মাঝে বালিশ রেখে ঘুমান। চিত হয়ে ঘুমানোর সময় হেটুর নিচে বালিশ নিতে পারেন। এতে ঘুমানোর পজিশন ঠিক থাকে ফলে ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান  লাগার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে। 
  • প্রতিদিন হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে ৩০ মিনিট ধরে পায়ের মাসলে সেঁক দিবেন।
  • অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না। প্রয়োজনে এক ঘন্টা পর পর হাঁটা, বসা ইত্যাদি ভাবে পজিশন চেঞ্জ করবেন।
  • কমপক্ষে সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট ধরে হাঁটবেন। 
  • সব সময় সঠিক মাপের আরামদায়ক জুতা পরিধান করবেন।
  • টাইট ফিটিং জামা কাপড় পড়ে রাতে ঘুমাতে যাবেন না। 

পায়ে টান লাগা থেকে প্রতিকার পেতে করনীয়

পায়ে টান লাগা থেকে প্রতিকার পেতে নিয়মিত পায়ের মাসলের স্ট্রেচিং করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে কিছু লোককে দুই ভাগে ভাগ করে গবেষণা করেন। যাদের অর্ধেক লোককে স্ট্রেচিং করার জন্য এক ভাগে এবং বাকিদেরকে স্ট্রেচিং থেকে বিরত রাখার জন্য আরেকটি ভাগে ভাগ করে রাখা হয়। এতে স্ট্রেচিং থেকে বিরত থাকা লোকদের থেকে স্ট্রেচিং করা লোকদের মাসল টানের প্রবণতা অনেক কম। স্ট্রেচিং করার কিছু পদ্ধতি নিম্নে বর্ণনা করা হলো> >

  • কাপ মাসল স্ট্রেচিং   

নিয়মিত কাপ মাসল স্ট্রেচিং করলে মাসল প্রসারিত হয় ফলে মাসল ক্রাম্প হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। দেয়ালে এক হাতের উপর ভর দিয়ে এক পা সোজা এবং এক পা হালকা ভাজ করে কোমরকে সোজা রেখে পায়ের কাপ মাসলের উপর টান পড়ে এমন পদ্ধতিতে দিনে তিনবার প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড ধরে কাপ মাসল স্ট্রেচিং করুন। অথবা বসে পা সোজা করে পায়ের আঙ্গুল গুলোকে নিজের দিকে ৩০সেকেন্ড ধরে  টানুন দিনে তিনবার । 

  • হ্যাম স্ট্রিং স্ট্রিচিং 

এক পা সোজা এবং অপর পা ৯০ ডিগ্রিতে রেখে ভাজ হওয়া হেটুতে দুই হাতে ভর দিয়ে মাথাকে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিতে হবে। কোমর সোজা করে সামনের দিকে তাকাতে হবে নিচের দিকে তাকালে ব্যায়াম কার্যকরী হবে না। 

স্ট্রিচিং ছাড়াও আরও যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া খুব জরুরীঃ->

  • পানি পানে সতর্কতা

প্রত্যেক মানুষের পানি পানে সতর্কতা হওয়া খুবই জরুরী। শরীরে পানির অভাব হলে মাংসপেশির কার্যকারিতায় প্রভাবিত হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ গ্লাস প্রত্যেক সুস্থ মানুষের পানি পান করা উচিত। আবহাওয়া ভেদে এবং শারীরিক পরিশ্রমের কারণে বা কারো কারো বেশি ঘাম হয় সে ক্ষেত্রে পানির পরিমাণ  কম বেশি হতে পারে।

digital-dream
  • ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করা
 ইলেকট্রোলাইটসের মূল উপাদান (সোডিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম) সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন দুধ, ডিম, বাদাম, ফলমূল, সবুজ শাকসবজি, কলা ,ডাব ইত্যাদি নিয়মিত ও পরিমিতভাবে খেতে হবে।
  •  লবণের পরিমাণে সতর্কতা
 যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তারা সাধারণত অতিরিক্ত লবণ খান না। তবে খেয়াল রাখতে হবে লবণের পরিমাণ একেবারেই শূন্যের কোঠায় আনা যাবে না। শরীরের প্রয়োজনীয়তা কে পূরণ করার জন্য কিছু লবণ খেতে হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

পায়ের রগে টান লাগলে কি ওষুধ খেতে হবে

পায়ের রগে টান লাগলে কি ওষুধ খেতে হবে এ প্রশ্ন সবার মনে। প্রথমত আপনি পায়ে ঠান্ডা সেক এবং পরবর্তীতে হালকা গরম সেক দিতে পারেন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন আপনার শরীরের ডিহাইড্রেরেশন বা পানিশূন্যতা কমাতে খাবার স্যালাইন,ডাব,বিভিন্ন শরবত বা জুস এবং ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয় খেতে পারেন। খুব বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়লে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল বা আইবু প্রোফেন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। মনে রাখবেন অবশ্যই এর সাথে এন্টি আলসারেন্ট ওষুধ গ্রহণ করবেন। 

 ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান :পরিশেষে

যদিও ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান লাগা কোন মারাত্মক সমস্যা নয় তবুও একে মোটেও অবহেলা বা গাফিলতি করবেন না। কারণ এ থেকে অনেক খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url